আপনার কি উপারজন কম এবং সেই কম উপারজনেয় টাকা জমানোর কথা ভাবছেন? আজকের এই টিপসে কীভাবে সহজে টাকা জমিয়ে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেবেন, তা নিয়ে নিচে বিসদে আলোচনা করা হয়েছে।
কীভাবে টাকা জমানোর অভ্যাস তৈরি করবেন?
টাকা জমানো শুনতে সহজ হলেও, অনেকের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। মাসের শুরুর দিকে খরচ শুরু হয়ে যায়, আর মাসের শেষে পরে থাকে খালি পকেট! কিন্তু একটু পরিকল্পনা আর সঠিক অভ্যাস গড়ে তুললেই টাকা জমানো টাকা জমানো খুব সহজ। আজকের ব্লগ এ আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো কীভাবে ধীরে ধীরে টাকা জমানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়,, যা আপনাকে ভবিষ্যতে আর্থিক স্বাধীনতা দেবে।
১. ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
অনেকেই মনে করেন টাকা জমাতে গেলে বড় অঙ্কের সঞ্চয় করতে হবে। কিন্তু আসলে তা নয় আপনি ছোট লক্ষ্য নিয়ে টাকা জমানো শুরু করতে পারেন তাতে টাকা সঞ্চয় করা অনেক সহজ হবে।
কীভাবে করবেন:
প্রথমে ছোট লক্ষ্য দিয়ে শুরু করুন, যেমন ১,০০০ বা ৫,০০০ টাকা প্রতি মাসে । লক্ষ্য ছোট হলে তা অর্জন করা সহজ হয় এবং আপনি ধীরে ধীরে বড় লক্ষ্য দিকে এগোতে পারবেন।
২. প্রতিদিন অল্প হলেও জমা করুন
টাকা জমানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো প্রতিদিন একটু একটু টাকা করে জমা করা। এতে আপনার মাস শেষে ভালো পরিমাণ টাকা জমা হবে, যা চোখে পড়ার মতো।
কীভাবে করবেন:
প্রতিদিন ২০, ৫০ বা ১০০ টাকা আলাদা করে রাখতে পারেন। প্রথম প্রথম এই টাকা আপনার হয়তো খুব বেশি মনে হবে না, কিন্তু মাস শেষে হিসেব করে দেখবেন ভালো অঙ্কের টাকা জমা হয়ে গেছে। আর প্রতিদিন এই অভ্যাসটি আপনাকে সঞ্চয়ের প্রতি আগ্রহী করে তুলবে।
৩. অপ্রয়োজনীয় খরচ কমান
টাকা জমানোর ক্ষেত্রে এই বিষয়টি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ তা হল আপনাকে অপ্রয়োজনীয় খরচগুলো কমাতে হবে। কারণ অপ্রয়োজনীয় খরচগুলো গুলোই মাসের শেষে আপনার পকেট খালি করে দেয়।
কীভাবে করবেন:
অনলাইন শপিং, বাইরে খাওয়া বা অযথা ঘোরাঘুরির জন্য এই অপ্রয়োজনীয় খরচগুলো হয়, টাকা জমানোর ক্ষেত্রে এই দিক গুলো একটু কন্ট্রোল করুন। এই খরচগুলো বাদ দিয়ে সেই টাকাটা সঞ্চয়ের হিসাব রাখতে হবে। আপনি যদি প্রত্যেক মাসে এই অপ্রয়োজনীয় খরচের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন, তাহলে খুব সহজে টাকা জমাতে পারবেন।
৪. অটোমেটিক সঞ্চয় সিস্টেম শুরু করুন
অনেকেই সঞ্চয় করার কথা ভুলে যান যার ফলে মাসের শেষে পকেট ফাঁকা হয়ে যায়। এক্ষেত্রে অটোমেটিক সঞ্চয় পদ্ধতি খুবই কার্যকর।
কীভাবে করবেন:
আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্বয়ংক্রিয় সঞ্চয় চালু করুন। মাসের নির্দিষ্ট একটি দিনে আপনার আয়ের একটি অংশ সরাসরি সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। এতে আপনি চিন্তা না করেই সঞ্চয় করতে পারবেন এবং মাস শেষে ফান্ডটাও দেখতে পাবেন।
৫. সঞ্চয়কে আলাদা রাখুন
আপনার সঞ্চয়কে নিয়মিত খরচের সাথে না মেশানোর চেষ্টা করুন। একবার সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হলে, সেটা যেন অন্য কোনো কাজে খরচ না হয়।
কীভাবে করবেন:
একটি আলাদা সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলুন, যেখানে শুধুমাত্র সঞ্চয়ের টাকা থাকবে। মাসিক খরচের সাথে যেন সঞ্চয় মিশে না যায়, সেটা নিশ্চিত করুন। এছাড়া, সঞ্চয় থেকে জরুরি খরচ ছাড়া অন্য কোনো কাজে টাকা তোলার অভ্যাস বাদ দিতে হবে।
৬. অপ্রত্যাশিত আয় জমা করুন
বোনাস, ট্যাক্স রিফান্ড, বা কোনো উপহার পেলে সেই টাকা খরচ করার আগে চিন্তা করুন। এ ধরনের অপ্রত্যাশিত আয় আপনার সঞ্চয়ের জন্য ভালো সুযোগ।
কীভাবে করবেন:
বোনাস বা যে কোনো অতিরিক্ত আয়ের টাকা সরাসরি সঞ্চয় অ্যাকাউন্টে জমা করুন। এভাবে আপনার সঞ্চয় দ্রুত বাড়বে এবং আপনি নিজের অজান্তেই বড় একটা ফান্ড তৈরি করতে পারবেন।
৭. অর্থনৈতিক লক্ষ্য ঠিক করুন
আপনার টাকা জমানোর উদ্দেশ্য পরিষ্কার থাকা জরুরি। ভবিষ্যতের একটি অর্থনৈতিক লক্ষ্য যদি ঠিক থাকে, তাহলে সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরি করা অনেক সহজ হবে।
কীভাবে করবেন:
লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, যেমন ভবিষ্যতের কোনো বড় কেনাকাটা, ভ্রমণ, বা জরুরি ফান্ড তৈরি করা। আপনি লক্ষ্য ঠিক করলেই টাকা জমানোর প্রতি আপনার আগ্রহ বাড়বে এবং আপনি প্রতিনিয়ত সঞ্চয় করার উৎসাহ পাবেন।
টাকা জমানোর অভ্যাস গড়ে তোলা কঠিন কিছু নয়, যদি আপনি পরিকল্পনা করে শুরু করেন। ছোট ছোট সঞ্চয়, অপ্রয়োজনীয় খরচ বাদ দেওয়া, এবং স্বয়ংক্রিয় সঞ্চয়ের মতো সহজ পদ্ধতি মেনে চললেই আপনি ধীরে ধীরে বড় একটা ফান্ড গড়ে তুলতে পারবেন। আজ থেকেই আপনার সঞ্চয়ের যাত্রা শুরু করুন, ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।